বঙ্গদেশের ইতিহাস (প্রাচীন বাংলার)

by Zabed Ahmed

বঙ্গ, বাঙ্গালাহ (বাঙ্গালা:)

একজন বাঙালি হিসেবে বঙ্গদেশ (প্রাচীন বাংলার) ইতিহাস জানাটা জরুরি । বঙ্গ নামক একটি জনগোষ্ঠীর কথা সর্বপ্রথম ঐতরেয় আরণ্যক-এ মগধের সাথে উল্লিখিত হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার সমুদ্রচারী একটি প্রাচীন রাজ্য হলো বঙ্গ । এই রাজ্যটি ভারতীয় উপমহাদেশের পূর্বভাগে এখন রাজনৈতিকভাবে বিভাজিত বঙ্গ অঞ্চলে (বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ) অবস্থিত ছিল। বঙ্গদেশ  বাংলার মানব-বসতির একটি সুপ্রাচীন স্থান বা জনপদ, যা  চৌদ্দ শতকে মুসলীম শাসনামলে পরিবর্তিত রূপে বাঙ্গালাহ হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে। কিন্তু পূর্বে অবিভক্ত বাংলার বেশ কিছু অঞ্চল (মুঘল আমলে) ভারতীয় রাজ্য বিহার, অসম ও ওড়িশা অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই অঞ্চলের প্রধান বাংলা ভাষা এবং এই বাংলার অধিবাসীরা বাঙালি জাতি হিসেবে অভিহিত হয়ে থাকেন। বৌধায়ন ধর্মসূত্রে একটি জনগোষ্ঠী হিসেবে বঙ্গদেশ নামের উল্লেখ রয়েছে, যারা কলিঙ্গের পাশেই (আর্যসভ্যতার সীমার বাইরে) বসবাস করত। অযোধ্যার সাথে বঙ্গের মৈত্রীবন্ধনের কথা রামায়ণ এ উল্লেখ রয়েছে। 

বঙ্গদেশের ইতিহাস

বাংলায় পাওয়া গেছে চার হাজার বছরের পুরনো তাম্রযুগের ধ্বংসাবশেষ। খ্রীষ্টপূর্ব দশম শতকে ইন্দো-আর্যদের আসার পর অঙ্গ, বঙ্গ এবং মগধ রাজ্য গঠিত হয় । অঙ্গ বঙ্গ এবং মগধ রাজ্যের বর্ণনা প্রথম পাওয়া যায় অথর্ববেদে প্রায় ১০০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে । খ্রীষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক থেকে বাংলার বেশিরভাগ এলাকাই শক্তিশালী রাজ্য মগধের অংশ ছিল। মগধ ছিল একটি প্রাচীন ইন্দো-আর্য রাজ্য। মগধের কথা রামায়ণ এবং মহাভারতে পাওয়া যায়। বুদ্ধের সময়ে এটি ছিল ভারতের চারটি প্রধান রাজ্যের মধ্যে একটি। মগধের ক্ষমতা বাড়ে বিম্বিসারের (রাজত্বকাল ৫৪৪-৪৯১ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ) এবং তার ছেলে অজাতশত্রুর (রাজত্বকাল ৪৯১-৪৬০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ) আমলে । আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের সেনাবাহিনী ৩২৬ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে মগধের নন্দ সাম্রাজ্যের সীমানার দিকে অগ্রসর হয়। গঙ্গা নদীর কাছাকাছি বিশাল ভারতীয় বাহিনীর মুখোমুখি হয়ে ভয় পেয়ে যায়, এবং এই বাহিনী বিয়াসের কাছে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। তখন আলেকজান্ডার কইনাস (তার সহকারী) এর সাথে দেখা করে সিদ্ধান্ত নেন তাদের ফিরে যাওয়াই ভাল। মগধেই গড়ে উঠেছিল মৌর্য সাম্রাজ্য ।  চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। অশোকের রাজত্বকালে দক্ষিণ এশিয়া, পারস্য, আফগানিস্তান অবধি বিস্তার লাভ করেছিল মৌর্য সাম্রাজ্য। পরবর্তীকালে শক্তিশালী গুপ্ত সাম্রাজ্য মগধেই গড়ে ওঠে যা ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তরাংশে এবং পারস্য এবং আফগানিস্তানের কিছু অংশে বিস্তার লাভ করেছিল। বাংলার প্রথম স্বাধীন রাজা ছিলেন শশাঙ্ক যিনি ৬০৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে রাজত্ব করেছিলেন। প্রথম বৌদ্ধ পাল রাজা প্রথম গোপাল ৭৫০ খ্রিষ্টাব্দে গৌড়ে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন। পাল বংশের সবচেয়ে শক্তিশালী দুই রাজা ছিলেন ধর্মপাল (রাজত্বকাল ৭৭৫-৮১০ খ্রিষ্টাব্দ) এবং দেবপাল (রাজত্বকাল ৮১০-৮৫০ খ্রিষ্টাব্দ)। ব্রিটিশ শাসনের সময়ে দুটি মারাত্মক দুর্ভিক্ষ বা মন্বন্তর বহু মানুষের জীবনহানি ঘটিয়েছিল। প্রথম দুর্ভিক্ষটি ঘটেছিল ১৭৭০ খ্রিষ্টাব্দে এবং দ্বিতীয়টি ঘটেছিল ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে। ১৭৭০ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির রাজত্বকালে বাংলার দুর্ভিক্ষটি ছিল ইতিহাসের সব থেকে বড় দুর্ভিক্ষগুলির মধ্যে একটি। বাংলার এক তৃতীয়াংশ মানুষের মৃত্যু ঘটেছিল ১৭৭০ এবং তার পরবর্তী বছরগুলিতে। সিপাহী বিদ্রোহ ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটিয়ে সরাসরি ভাবে ব্রিটিশ রাজবংশের শাসনাধীনে আসে বাংলা। বাংলা খুব ভালো ধান উৎপাদক অঞ্চল হিসেবে পরিচিত ছিল এবং এখানে সুতিবস্ত্র মসলিনও তৈরি হত। এছাড়া এই অঞ্চল ছিল পৃথিবীর পাট চাহিদার মুখ্য যোগানকারী। ১৮৫০ সাল থেকেই ভারতের প্রধান শিল্পাঞ্চল বাংলায় গড়ে উঠতে থাকে। কিন্তু বাংলার বেশিরভাগ মানুষ তখনও কৃষির উপরেই বেশি নির্ভরশীল ছিলেন। ভারতের রাজনীতি এবং সংস্কৃতিতে বাংলার মানুষেরা অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করলেও বিশেষ করে পূর্ব বাংলায় তখনও খুব অনুন্নত জেলা ছিল। ১৮৭৭ খ্রিষ্টাব্দে রানী ভিক্টোরিয়া যখন ভারতের সম্রাজ্ঞী উপাধিতে নিজেকে ভূষিত করলেন তখন ব্রিটিশরা কলকাতাকে ব্রিটিশ রাজ্যের রাজধানী বলে ঘোষণা করে।

ভীমের বঙ্গ অভিযান

মহাভারতের ‘দিগ্বিজয়’ অধ্যায়ে বর্ণনা করা হয়েছে যে, ভীম পার্বত্য অঞ্চলের শক্তিশালী এক রাজাকে পরাজিত করার পর মোদগিরির রাজাকে হত্যা করেন এবং কৌশিকী নদীর তীরবর্তী এলাকা শাসনকারী অপর একজন শাসককে দমন করেন।
তাম্রলিপ্তের রাজা চন্দ্রসেন ও সমুদ্রসেনকে পরাস্ত করে তাঁরা সুহ্ম রাজ্যের কৈবর্ত রাজাকেও পরাজিত করেন। এরপর তাঁরা সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলের রাজাদের পরাজিত করেন। এরপর তাঁরা লৌহিত্য রাজ্যের দিকে অগ্রসর হন। 

ভার্গব রাম ও বাসুদেব কৃষ্ণ- এর বঙ্গ অভিযান

ভার্গব রাম কাশ্মীর, কুন্তি, ক্ষুদ্রক, দারদ,অঙ্গ, মালব, তাম্রলিপ্ত, রক্ষোবাহ, বঙ্গ, কলিঙ্গ, বিদেহ, তাম্রলিপ্ত, রক্ষোবাহ, বিতাহোত্র, মার্তিকাবত ও ত্রিগার্ত রাজ্য জয় করেছিলেন। বাসুদেব কৃষ্ণ অঙ্গ, বৎস, মগধ, বঙ্গ, কোশল, কলিঙ্গ, কাশী, গর্গ্য, পৌণ্ড্র ও করুষ রাজ্যগুলিকে জয় করেছিলেন। অর্জুন কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের পর বঙ্গ, পুণ্ড্র ও কোশল রাজ্যগুলিকে জয় করেন।

কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে বঙ্গ

যুদ্ধহস্তী পরিচালনায় বঙ্গ সেনাবাহিনী দক্ষ ছিল। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে কলিঙ্গ রাজ্যের সঙ্গে বঙ্গ সেনাবাহিনীও কৌরবদের পক্ষ নেয়। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের সময় বঙ্গের ভগদত্ত ছিলেন রাজা ।

যুধিষ্ঠিরের করদ রাজ্য

যুধিষ্ঠিরের রাজসভায় অঙ্গ, বঙ্গ ও পুণ্ড্র রাজ্যের রাজারা উপস্থিত থাকতেন বলে উল্লেখ পাওয়া যায়। বঙ্গ, অঙ্গ, পুণ্ড্র, ওড্র, চোল, দ্রাবিড়, অন্ধ্র রাজ্য যুধিষ্ঠিরকে কর দিত । অঙ্গ, বঙ্গ, পুণ্ড্র, সনবত্য ও গয়া – এই সদ্বংশজাত ক্ষত্রিয় রাজারা নিয়মিত যুদ্ধবিদ্যার চর্চা করতেন। বঙ্গ, কলিঙ্গ, মগধ, তাম্রলিপ্ত, সুপুণ্ড্রক, দৌবলিক, সাগরক, পাত্রোনা, সৈসব ও কর্ণপ্রবর্ণকরা দলে দলে যুধিষ্ঠিরের রাজদ্বারে দাঁড়িয়ে থাকতেন।

বঙ্গদেশ শাসিত প্রধান প্রধান সাম্রাজ্য

নন্দ সাম্রাজ্য (৩৪৫ খ্রীঃ পূর্ব – ৩২১ খ্রীঃ পূর্ব): নন্দ সম্রাজ্য গড়ে ওঠে প্রাচীন ভারতে মগধ জনপদকে কেন্দ্র করে। এটি টিকে ছিলো ৩৪৫ খ্রীষ্টপূর্ব থেকে শুরু করে ৩২১ খ্রীঃ পূর্ব পর্যন্ত । এই সাম্রাজ্যের শাসকরা তাদের ধনসম্পদ অর্জনের জন্য বিখ্যাত। এ রাজ্যের সমরিক শক্তি সম্পর্কে জানা যায় ২ লাখ পদাতিক সৈন্য, ২ হাজার রথ ও ৩ হাজার হাতি ছিলো। নন্দ অনেকগুলো মন্ত্রীর সাহায্য নিয়ে সাম্রাজ্য শাসন করতেন।

মৌর্য্য সাম্রাজ্য (৩২২ খ্রীঃ পূর্ব – ১৮৫ খ্রীঃ পূর্ব): ৩২২ খ্রীষ্টপূর্বাদে নন্দ রাজকে পরাজিত করে  চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য মৌর্য সম্রাজ্য স্থাপন করে। মৌর্য সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল পাটলিপুত্র । 

অন্ধ্র ও শুঙ্গ  বংশ (১৮৫ খ্রীঃ পূর্ব – ২৫০ খ্রীঃ): অশোকের মৃত্যুর প্রায় ৫০ বছর পরে ১৮৫ খ্রীঃ পূর্বে প্রতিষ্ঠিত হয় শুঙ্গ সাম্রাজ্য। শুঙ্গ সাম্রাজ্য এর রাজধানী ছিল পাটলীপুত্র ।

গুপ্ত সাম্রাজ্য (৩২০-৫৫০ খ্রীঃ): গুপ্ত সম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ১ম চন্দ্রগুপ্ত (শ্রী-গুপ্ত) । সমুদ্রগুপ্ত এই যুগের শক্তিশালী রাজা ছিলেন । গুপ্ত সম্রাজ্যের ব্যপ্তি ছিলো ৩২০ খ্রীষ্টাব্দ থেকে ৫৫০ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত ।গৌড় শাসন (৬০৬-৬৩৭ খ্রীঃ): হলো মধ্য ও ধ্রুপদী যুগের বঙ্গদেশের একটি রাজ্য ছিলো গৌড় শাসন । গৌড় রাজ্যের রাজধানী ছিলো মুর্শিদাবাদ জেলার সদরশহর বহরমপুর থেকে ৯.৬ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে কর্ণসুবর্ণ নামক স্থানে ছিলো।

পাল বংশ (৭৭৫-১১২৪ খ্রীঃ): ভারতীয় উপমহাদেশের পরবর্তী ধ্রুপদি যুগের একটি হলো পাল সম্রাজ্য। বাংলায় পাল বংশের শাসন প্রতিষ্ঠিত ছিলো প্রায় ৪’শ বছর ধরে । গৌড় শাসনাবসানের পর আনুমানিক ৭৫৪ খ্রীষ্টাব্দে পাল সম্রাজ্যের গোড়াপত্তন ঘটে ।

সেন বংশ (১০৯৮-১২০৪ খ্রীঃ): ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে সেন বংশ বাংলাকে শাসন করে গেছে। দক্ষিণ ভারতের কর্ণাট অঞ্চলে সেনদের আদি বাসস্থান ছিল । সামন্ত সেন ও তাঁর ছেলে হেমন্ত সেনের সময় রাঢ় অঞ্চলে সেনরা কিছুটা আধিপত্য তৈরি করেছিল।  বল্লালসেন (১১৫৯ – ১১৭৯ খ্রিস্টাব্দ) পালরাজা গোবিন্দ পালকে পরাজিত করেন।

মুসলিম শাসন (১২০৪-১৭৫৭ খ্রীঃ): বাংলায় মুসলিম শাসনের সূচনা হয় বখতিয়ারের নদীয়া জয়ের মাধ্যমে । ১২০৪ খ্রীষ্টাব্দে ইখতিয়ার উদ্দীন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজী সেন বংশের লক্ষণ সেনকে পরাজিত করে বাংলায় মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করেন । বখতিয়ার খিলজীর রাজ্যের সীমানা ছিল পূর্বে তিস্তা ও করতোয়া নদী, দক্ষিণে পদ্মা নদী, উত্তরে দিনাজপুর জেলার দেবকোট থেকে রংপুর শহর পর্যন্ত এবং পশ্চিমে বিহার পর্যন্ত। বখতিয়ার কোনো স্বাধীন শাসক ছিলেন না, তিনি নিজের জন্য সুলতান উপাধিও নেননি।

ব্রিটিশ শাসন (১৭৫৭-১৯৪৭ খ্রীঃ): পলাশী যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলা-কে পরাজিত করার মাধ্যমে ১৭৫৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম ব্রিটিশ শাসনের আগমন ঘটে। ব্রিটিশ রাজ্যের ইতিহাস বলতে ভারতীয় উপমহাদেশে ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী ব্রিটিশ শাসনের সময়কালকে বোঝায়। ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দে যখন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন ব্রিটিশ রাজ বা রাণী ভিক্টোরিয়ার কাছে হস্তান্তর করা হয় তখন এই শাসনব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল ।

পাকিস্তান আমল (১৯৪৮-১৯৭১ খ্রীঃ): ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হয় একটি মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে । পূর্ব পাকিস্তান ছিল ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের পূর্ব অঙ্গ যা ১৯৭১-এ স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের নাম ছিল পূর্ব বাংলা। পূর্ব পাকিস্তান গঠিত হয়েছিল প্রধানত পূর্ব বঙ্গ নিয়ে যা বর্তমানের বাংলাদেশ। পূর্ব পাকিস্তান গঠিত হয়েছিল প্রধানত পূর্ব বঙ্গ নিয়ে যা বর্তমানের বাংলাদেশ। পশ্চিম পাকিস্তানের প্রভাব ও স্বৈর দৃষ্টিভঙ্গীর বিরূদ্ধে প্রথম পদক্ষেপ ছিল মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠা। ১৯৪৯ সালে এই দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নিবার্চনে বিজয় এবং ১৯৬৫ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পাকিস্তানের সামরিক প্রশাসক জেনারেল আইয়ুব খানকে পরাজিত করার লক্ষ্য নিয়ে সম্মিলিত বিরোধী দল বা ‘কপ’-প্রতিষ্ঠা ছিল পাকিস্তানী সামরিক শাসনের বিরূদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানী রাজনীতিবিদদের নেতৃত্বমূলক আন্দোলনের মাইলফলক। পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধিকারের প্রশ্ন ১৯৫০-এর মধ্যভাগ থেকে উচ্চারিত হতে থাকে। ১৯৬৯-এ আইয়ুব খানের পতন হয় তবে সামরিক শাসন অব্যাহত থাকে। ১৯৭০-এ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগ এ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে এবং পাকিস্তানে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানী রাজনৈতিকদের ষড়যন্ত্রের কারণে প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান শেখ মুজিবের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর থেকে বিরত থাকেন।

পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসাবে বাংলাদেশের উদ্ভব হয়।

গ্রিসের সভ্যতার অবসানের আগেই ইতালিতে টাইবার নদীর তীরে একটি বিশাল সম্রাজ্য ও সভ্যতা গড়ে উঠে। রোমকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এই সভ্যতা রোমান সভ্যতা নামে পরিচিত।রোমান সভ্যতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের এই ব্লগটি পড়ুন

Related Posts

Leave a Comment