প্রথম উসমান

প্রথম উসমান এর শাসন সময় এবং সাম্রাজ্য বিস্তার

by mridul

আমাদের আগে যারা  পৃথীবি ভ্রমন করে গেছেন এবং জানার,মানার,বোঝার আর স্বরণীয় কাজ করে গেছেন তাদের নিয়ে গঠিত হয় ইতিহাস। তাদের মধ্যে যেমন ভালো ইতিহাস আছে তেমনি আছে খারাপ ইতিহাস। কেউ অন্যায় করে গঠন করেছে ইতিহাস কেউ আবার তার বিরুদ্ধে গিয়ে।আমার পাঠকের মধ্যে যারা ইতিহাস আর পাতিহাসের মধ্যে পার্থক্য করতে পারেন না তাদের জন্য তৈরি করেছি এই আলোচিত মুসলিম খেলাফতের আদি অন্ত আর সুলতানদের জীবন বৃত্তান্ত। বুঝতেই পারছেন আমি আজ বলতে যাচ্ছি উসমানিও খেলাফতের প্রতিষ্ঠাতা মহাবীর, মুসলিম ইতিহাসের উজ্জন নক্ষত্র, এরতুগরুল আর হালিমা সুলতান এর পূত্র গাজী উসমান বে এর সাম্রাজ্জের কথা। চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।

উসমান যার নামেই নামকরন হয় উসমানিও সাম্রাজ্যের যাকে অটোম্যান সাম্রাজ্য ও বলা হয়।উসমান থেকে উতমান এবং ধিরে ধিরে ইউরোপিওদের কাছে হয়ে যায় অটোম্যান  সে যাই হউক আমরা উসমান বলেই সম্মোধন করব। প্রথম উসমানের নাম তৃতীয় রাশিদুন খলিফা উসমান ইবনে আফফান এর নামে নামকরণ করা হয়েছিল। তার জন্মের পূর্ব থেকেই মোঙ্গলদের নির্যাতন তীব্র পর্যায় ধারন করেছিল তারা বাচ্চা, বুড়ো ,নারী কাউকেই ছার দিত না, যেখানে যেত তা ধংসস্তুপে পরিণত করত । অপরদিকে ছিল বাইজেন্টাইনরা।উসমান দুই দলের সাথেই বিরত্বের সাথে যুদ্ধ করেন এবং প্রতিষ্ঠা করেন সালতানাতে উসমানিয়া । উসমানের জীবনের অভিচ্ছেদ্ধ অংশ ছিল যুদ্ধ তার বাবা এরতুগরুল ও পুরোটা জীবন জালিমের জুলুমের বিপক্ষে যুদ্ধ করে গেছেন যার ফলে বালক বয়স থেকেই একপ্রকার দেয়ালে পিঠ লাগার কারনেই যুদ্ধ করতে হয় তাকে।উসমান গাজি বিখ্যাত শাইখ এদিবালিকে শ্রদ্ধা করতেন এবং তার মতামতকে গুরুত্ব দিতেন। তিনি প্রায়ই এসকিশেহিরে এদিবালির সাথে সাক্ষাত করতেন। এক রাতে এদিবালির দরগাতে অবস্থান করার সময় দেখা স্বপ্ন পরের দিন তিনি এদিবালিকে জানান। তিনি বলেন, “আমার শাইখ, স্বপ্নে আমি আপনাকে দেখেছি। একটি চাঁদ আপনার বুকে দেখা দিয়েছে। এটি উঠতে থাকে এবং আমার বুকে এসে অবতীর্ণ হয়। আমার নাভি থেকে একটি গাছ উঠে। এটি বৃদ্ধি পায় এবং শাখাপ্রশাখা এত বেশি হয় যে এর ছায়া পুরো পৃথিবীকে আবৃত করে ফেলে। এই স্বপ্নের অর্থ কী??

”কিছুক্ষণ নিশ্চুপ থাকার পর এদিবালি ব্যাখ্যা দেন:

“অভিনন্দন উসমান! সর্বশক্তিমান আল্লাহ তোমার এবং তোমার বংশধরদেরকে সার্বভৌমত্ব প্রদান করেছেন। আমার কন্যা তোমার স্ত্রী হবে এবং সমগ্র বিশ্ব তোমার সন্তানদের নিরাপত্তাধীন হবে।”উসমানের স্বপ্ন উসমানীয় সাম্রাজ্যের উত্থানে জোরালো ভূমিকা রেখেছে। উসমানীয় পণ্ডিতদের কাছে এই স্বপ্ন একটি গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক উপাদান ছিল।

একটি প্রচলিত মতানুযায়ী প্রথম উসমানের পিতা এরতুগরুল মোঙ্গলদের আগ্রাসন থেকে রক্ষা করে তুর্কি কায়ি গোত্রকে মধ্য এশিয়া থেকে আনাতোলিয়া নিয়ে আসেন। তার মায়ের নাম ছিল হালিমা খাতুন। উসমান রুম সুলতান প্রথম কায়কোবাদের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন। সুলতান তাকে আনাতোলিয়ায় বেয়লিক প্রতিষ্ঠা এবং পশ্চিমে বাইজেন্টাইনদের দিকে সীমানা বৃদ্ধির অনুমতি প্রদান করেছিলেন। 

বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য দুর্বল হতে থাকায় এই অনুমতি সুযোগ সৃষ্টি করে। অন্যদিকে পূর্বাঞ্চলে সেলজুক তুর্কিদের অধীনে মুসলিমরা ক্রমাগত মোঙ্গল আগ্রাসন ও অভ্যন্তরীণ কলহের কারণে বিভক্ত হয়ে যাচ্ছিল। ১২৫৮ সালে উসমানের জন্মের বছরে হালাকু খান বাগদাদ আক্রমণ করেন। ১২৫১ সালে এরতুগরুল নাইসিয়ান শহর থেবাসিওন জয় করেন। এর নতুন নামকরণ করা হয় সোগুত এবং এটি তার সাময়িক রাজধানী হয়। উসমান এখানে ১৩ ফেব্রুয়ারি ১২৫৮ তে জন্মগ্রহণ করেছেন।

পিতার মৃত্যুর পর উসমান প্রধান বা বে হন। এই সময় নাগাদ দুর্বল হয়ে পড়া বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সমগ্র ইসলামি জগত থেকে সৈনিকরা তার শাসনাধীন অঞ্চলে এসে জড়ো হয়। এছাড়াও মোঙ্গলদের হাত থেকে বাঁচার জন্য অসংখ্য উদ্বাস্তু উসমানের আমিরাতে এসে আশ্রয় নেয়। তাদের মধ্যে অনেক গাজি ছিল। উসমানের দক্ষ নেতৃত্বে এই যোদ্ধারা দ্রুত কার্যকর বাহিনী হিসেবে গড়ে উঠে এবং এর ফলে সাম্রাজ্যের ভিত্তি স্থাপিত হয়।

উসমান বাইজেন্টাইনদের দিকে সীমানা বৃদ্ধি এবং তার তুর্কি প্রতিবেশিদের সাথে সংঘর্ষ এড়িয়ে চলার কৌশল গ্রহণ করেন। উত্তর ফ্রিজিয়ার অনুর্ব‌র এলাকা থেকে বিথিনিয়ার উর্বর সমভূমির দিকে যাওয়া গিরিপথের মধ্য দিয়ে তিনি প্রথমে অগ্রসর হন। স্ট্যানফোর্ড শর মতে এসকল বিজয় স্থানীয় বাইজেন্টাইন অভিজাত ব্যক্তিবর্গে‌র বিরুদ্ধে সংঘটিত হয়, তাদের মধ্যে কিছু যুদ্ধে পরাজিত হন এবং অন্যান্যরা বিভিন্ন চুক্তির মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে অধীনস্থ করা হয়।

প্রথমদিককার এসব বিজয় উসমানীয় লেখকদের পছন্দের বিষয়বস্তু ছিল। এসকল কিংবদন্তি কবিরা তাদের লেখায় ব্যবহার করেছেন ফলে তা পরবর্তী যুগেও টিকে থাকে। উসমানীয় লেখকরা এসকল কিংবদন্তীকে গুরুত্ব প্রদান করতেন।

উসমান তার জীবনে অনেক যুদ্ধ করেছেন তার মদ্ধে উল্লেখযুগ্য কিছু আমরা তুলে ধরলাম 

কুলুচাহিসার বিজয়

তার বেইলিক প্রতিষ্ঠার পরে ওসমানকে দুটি ফ্রন্টে লড়াই করতে হয়েছিল: একটি বাইজেন্টাইনদের বিরুদ্ধে, এবং অন্যটি তার শাসনের বিরোধী তুরকোমেন বেইলিকদের বিরুদ্ধে, বিশেষত জার্মিয়ানিডদের বিরুদ্ধে। ওসমান বাইজান্টাইনদের ব্যয়ে প্রসারিত করার দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন এবং সেই সময় থেকে প্রাথমিক অটোমান গোলটি বাইজেন্টাইন জমিগুলিতে বিজয় লাভ করে। [58] কিছু বিবরণ ইঙ্গিত দেয় যে ওসমান বাইজান্টাইনদের বিরুদ্ধে প্রথম লড়াই শুরু করেছিলেন যার লক্ষ্য ছিল ৬৮৩ বা ৬৮৪ হি / ১২৮৪ বা ১২৮৮ খ্রিস্টাব্দের বসন্তে তার পরাজয়ের প্রতিশোধ নেওয়া, যেখানে বার্সার টেকফুরের নেতৃত্বে বাইজেন্টাইনরা তাকে আক্রমণ করেছিল এবং তার পুরুষ। সন্দেহ আছে যে ওসমান তার একজন গুপ্তচর থেকেই এই আক্রমণের কথা জানতেন। তা সত্ত্বেও, তিনি বাইজেন্টাইনদের সাথে সংঘর্ষের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং তিনি পরাজিত হন এবং তার ভাগ্নে কোকা সরুহান বে, সাচে বিয়ের ছেলে সহ তিনি হতাহত হন এবং প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন। এর ভিত্তিতে, ৬৮৫ হিজরি / ১২৮৬ খ্রিস্টাব্দের দিকে ওসমান কুলুচাহিসার দিকে এগিয়ে গেলেন তিনশো যোদ্ধার একটি সামরিক বাহিনীর প্রধানের দিকে, এটি একটি দুর্গ ছিল যা উলুদাগ পর্বতের সীমার মধ্যে আঙ্গেল থেকে দু’টি দল দূরে অবস্থিত ছিল। আমির রাতে দুর্গে আক্রমণ করে এবং এটি জয় করতে সক্ষম হয়, এবং তার বেইলিক উত্তর দিকে স্রোতের নিকটবর্তী অঞ্চলে প্রসারিত করে। কুলুচাহিসার উসমানীয় বিজয় দুর্গের গভর্নরকে সূত্রপাত করেছিল, যিনি একজন মুসলিম শাসক, বিশেষত সীমান্ত আমিরের অধীনস্ত বিষয় হতে অস্বীকার করেছিলেন, তাই তিনি কুলুচাহিসার গভর্নরের সাথে জোটবদ্ধ হয়েছিলেন এবং উভয় ব্যক্তিই বাইজেন্টাইন সমস্ত ভূমি দখল করার লক্ষ্যে মুসলমানদের সাথে লড়াই করতে রাজি হন যতে তারা ভিষন ভাবে পরাজিত হয়। এইভাবে, অটোমান এবং বাইজান্টাইনরা আবার যুদ্ধে মিলিত হয়েছিল,বিলেসিক এবং ইনেগুল মধ্যে কোনো এক জায়গায়, যেখানে ওসমানের ভাই সাভচি বে এবং বাইজেন্টাইন কমান্ডার পিলাতোস নিহত হয়েছিল। যুদ্ধ দিয়ে শেষ হয়েছিল একটি অটোমান বিজয়। এরপরে, অটোমানরা কুলুচাহিসার প্রবেশ করেছিল যেখানে তারা প্রথমবারের মতো শহরের চার্চটিকে মসজিদে রূপান্তর করেছিল। ওসমান নতুন বিজয়ী শহরের জন্য একটি কাদি (ম্যাজিস্ট্রেট) এবং একজন সুবায়ে (পুলিশ প্রধান) নিযুক্ত করেছিলেন। Conquতিহাসিকরা এই বিজয়ের তারিখ নির্ধারণে ভিন্ন মত পোষণ করেছিলেন, তবুও কেউ এটিকে ৬৮৫ হি / ১২৮৬এর পূর্বে বা ৬৯১ হিঃ / ১২৯১ এরও বেশি আগে তৈরি করতে পারেনি। ওসমান তার নতুন শহরকে বাইজেন্টাইনদের বিরুদ্ধে তাঁর সামরিক অভিযানের এক মঞ্চস্থ কেন্দ্র বানিয়েছিলেন এবং আদেশ দিয়েছিলেন যে শুক্রবার খুৎবায় তাঁর নাম পৌঁছে দেওয়া, যা তাঁর সার্বভৌমত্ব ও কর্তৃত্বের প্রথম প্রকাশ।]সেলজুক সুলতানের কাছ থেকে ওসমানের কাছে প্রেরণ করা মিটার যুদ্ধের ড্রামের অনুরূপ

ওসমানের সর্বশেষ বিজয়টি তার তারিখ অবধি সবচেয়ে বড় ছিল। তৃতীয় সেলজুক সুলতান আলাউদ্দিন কায়কোবাদ সেলূক ও ইসলামের নামে ওসমানের কৃতিত্বের জন্য গভীর প্রশংসা প্রকাশ করেছিলেন এবং তাঁকে ‘হযরত-উসমান গাজী মারজুবান’ উথমান শাহ (সম্মানিত বিজয়ী ও সীমান্তরক্ষী ওসমান শাহ) উপাধি প্রদান করে। সুলতান ওসমানকে যে সমস্ত জমি অধিগ্রহণ করেছিলেন এবং ইস্কিহির ও আন্না শহরগুলি পরিচালনা করেছিলেন। তদুপরি, সেলজুক সুলতান ওসমানকে সকল প্রকারের কর থেকে ছাড়ের আদেশ জারি করেছিলেন। ওসমান সেলজুক দরবারে নতুন উচ্চ মর্যাদাকে প্রতিফলিত করে সুলতানের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি উপহারও পেয়েছিলেন। এই উপহারগুলিতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে: সোনার যুদ্ধের ব্যানার, একটি মেহেটার (যুদ্ধের ড্রাম), একটি টিউ (গোলাকার সাথে সাজানো ঘোড়ার লেজের চুলের একটি খুঁটি), একটি তুষল, একটি সজ্জিত তরোয়াল, একটি আলগা কাঁচি এবং এক লক্ষ দিরহাম । উক্ত আদেশে ওসমানের অধিভুক্ত সমস্ত অঞ্চলে শুক্রবার খুবায় উল্লিখিত অধিকারের স্বীকৃতিও অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং তার নামে পুদিনা মুদ্রার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সুতরাং, ওসমান সুলতান হয়েছিলেন, তবে কেবল উপাধি নেই 

বর্ণিত আছে যে সুলতানের কয়কবাদের আগমনের কথা ঘোষণা করে যখন ড্রামগুলি মারধর করা হয়েছিল, তখন ওসমান মহিমান্বিত হয়ে উঠে দাঁড়ালেন, এবং সংগীত থামার আগ পর্যন্ত তা থেকে যায়। সেই দিন থেকে, অটোমান সৈন্যরা যখনই ড্রাম মারত তখন তাদের সুলতানের জন্য মহিমান্বিত হয়ে দাঁড়িয়েছিল ।

বিলেসিক, ইয়ারহিসার এবং এনগেল বিজয়

কুলুচাইসার বিজয়ের পরপরই ওসমান তার সৈন্যদের নিয়ে উত্তর দিকে সাকারিয়া নদীর দিকে যাত্রা করলেন। সেখানে পৌঁছে তিনি অভিযান চালিয়ে গয়নিক এবং ইয়েনিস তারাক্লির দুর্গগুলি বিজয় করেন। অনেকের যুক্তি রয়েছে যে এই সময়ের মধ্যে ওসমান তার বাইজান্টাইন বন্ধু কসে মিহালের একটি বার্তা পেয়েছিলেন এবং তাকে একটি গোপন ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছিলেন যা বিলেসেক এবং ইয়ারিশার টেকফুরদের দ্বারা প্রস্তুত করা হচ্ছে। দু’জনই ওসমানকে তাদের বাচ্চাদের বিয়েতে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে হত্যা করার লক্ষ্যে ছিল। বিলিসেকের টেকফুরের হাতে বিশ্বাসঘাতকতা হওয়ায় ওসমান হতাশ হয়েছিলেন। এর কারণ, তিনি বিলিসেকের সাথে সম্পর্ককে বিশ্বাস ও সৎ বিশ্বাসের ভিত্তিতে গড়ে তোলা বলে বিবেচনা করেছিলেন, বিশেষত যে তাঁর বংশটি যখনই চরানের জায়গাগুলির মধ্যে স্থানান্তরিত করত, তখন তারা তাদের জিনিসপত্র এই দুর্গে ফেলে রাখত; ফাঁদ থেকে বাঁচার জন্য এবং দুর্গটি দখলের জন্য ওসমান একটি পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি তাঁর চল্লিশ জন সৈন্যকে বংশের কিছু জিনিস নিয়ে যাচ্ছিলেন বিলিসেকে রাখার জন্য, সেখানে বেশিরভাগ বাসিন্দা বিবাহের বাইরে উপস্থিত ছিলেন। একবার তাঁর লোকেরা দুর্গে প্রবেশ করার পরে তারা দ্রুত তার ছোট গ্যারিসনকে পরাস্ত করে এবং তা অটোমানদের হাতে পড়ে। তারপরে ওসমান কিছুটা বাইজানটাইন রাত্রের পরে ভোজে গেলেন, যারা পরে তার লোকজন দ্বারা সহজেই আক্রান্ত হয়েছিল। একটি সংক্ষিপ্ত যুদ্ধ হয়েছিল যার মধ্যে ওসমান বিজয়ী হয়েছিল এবং বেশিরভাগ বাইজেন্টাইন মারা গিয়েছিল। এরপরে ওসমান ইয়ারহিসারের দিকে যাত্রা করে অবাক করে নিয়ে যায়; দুর্গের চৌকির একটি বড় অংশ নিহত হয়েছিল, এবং বাকী সবাই বন্দী ছিল। টেকফুরের মেয়ে হলফীরাও এই ক্রিয়াতে ধরা পড়েছিল, শীঘ্রই তিনি ওসমানের পুত্রবধূ হয়ে ওঠেন, কিছু পরে তার পুত্র ওরহানকে বিয়ে করেন এবং তার নাম পরিবর্তন করে নীলফার হাতুন করা হয়। এরপরে ওসমান এবং তাঁর বেশ কয়েকজন লোক দুর্গের উপরে অবরোধ তৈরি করেন এবং সহজেই   ইনেগুল এর আশেপাশের সমস্ত শহর ও গ্রাম দখল করেছিলেন।

এবং এভাবে একের পর এক বিজয়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় মহান উসমানিও সাম্রাজ্যের ভিত্তি। উসমানের জীবনের বাকি যুদ্ধের মধ্যে হল অন্যতম  হলো আর্মেনিয়ান বেলির যুদ্ধ ,ডোমানিকের যুদ্ধ, বাফিয়াসের যুদ্ধ, ডিম্বোসের যুদ্ধ, বুরসা অবরোধ ।

উসমানের তলোয়ার উসমানীয় সুলতানদের অভিষেকের সময় ব্যবহৃত রাষ্ট্রীয় তলোয়ার ছিল। উসমান তার পৃষ্ঠপোষক ও শ্বশুর শাইখ এদিবালি কর্তৃক প্রদত্ত তলোয়ার গ্রহণের মাধ্যমে এই প্রথা শুরু হয়। সুলতানের ক্ষমতা গ্রহণের দুই সপ্তাহের মধ্যে অভিষেক অনুষ্ঠান হত। আবু আইয়ুব আনসারির মাজার কমপ্লেক্সে এই অনুষ্ঠান সম্পন্ন হত। তলোয়ার প্রদানের প্রতীকি অর্থ রয়েছে, এর দ্বারা বোঝানো হত সুলতানকে প্রথম ও প্রধানতম যোদ্ধার দায়িত্বপালন করতে হবে। মেভলেভি তরিকার দরবেশ কোনিয়ার শরিফ নতুন সুলতানকে এই তলোয়ার প্রদান করতেন এবং এই দায়িত্বপালনের জন্য তাকে কোনিয়া থেকে কনস্টান্টিনোপলে আসতে হত। 

উসমান আল্প এর স্ত্রী ২ জন ছিলেন যারাঃ
  • রাবিয়া বালা হাতুন (বিয়ে. ১২৮০), শাইখ এদেবালির কন্যা
  • মালহুন হাতুন (বিয়ে. ১২৮৯), উমর বের কন্যা 

উসমান আল্প এর কন্যা সন্তান ছিলেন ফাতেমা

উসমান আল্প এর পুত্র সন্তানঃ
  • প্রথম ওরহান (১২৯১-১৩৬২) — মালহুন হাতুনের সন্তান।
  • আলাউদ্দিন পাশা (১২৯২-১৩৩১) — ১৩৩২ সালে মৃত্যু, বালা হাতুনের সন্তান
  • জোবান বে
  • পাজারলু বে
  • হামিদ বে
  • মেলিক বে

অবশেষে ১/৯ আগস্ট ১৩২৬ এ ৬৮ বছর বয়সে এই গাজী মৃত্যুবরন করেন ।ইসলাম এর খেদমতে জীবন উতসর্গ করা এই মহান ব্যাক্তিকে যেনো আল্লাহ তা’য়ালা জান্নাতুল ফিরদাউস দান করেন। আমীন।

মোগল সাম্রাজ্যের তৃতীয় সম্রাট সম্রাট আকবর। সম্রাট আকবর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের এই ব্লগটি পড়ুন

Related Posts

Leave a Comment